ইমামুল হাসান স্বপন-নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম: সকলেই চিনেন তাঁকে। নাম তাঁর আলী আহমেদ চুনকা। যারা তাকে দেখেছেন তাদের রয়েছে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। আর যারা তাকে দেখেন নি কিন্তু কর্মময় জীবন সম্পর্কে শুনেছেন সেই নতুন প্রজন্ম চুনকা ভাইকে সম্মানের সাথে স্মরণ করেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও আরেকজন আলী আহমেদ চুনকার জন্ম হয়নি । তাঁর জীবনী পাঠ করে কিংবা হেটে যাওয়া পথে চলে এই প্রজনের কেউ যদি উঠে আসতে পারেন তবে নারায়ণগঞ্জের মানুষ শতাব্দীর মধ্যে আরেক জন চুনকার দেখা পাবেন। নয়তো শতাব্দীর পর আবার অপেক্ষায় থাকতে হবে । আমাদের অনুরোধ থাকলো চুনকা ফাউন্ডেশনেসর প্রতি ”আমাদের চুনকা ভাই” বইটি যেনো আরো বেশী বেশী ছাপিয়ে নতুন প্রজন্মকে পড়তে সুযোগ করে দেয়া হয়। তাতে এই জনপদের হয়তো বা কেউ না কেউ বের হয়ে আসতে পারেন অথবা চুনকা ভাইয়ের অনেক গুনের অনুসরণ বাড়তে পারে। যা হবে সকলের জন্য কল্যাণকর।
বর্তমান প্রজন্ম যদি আরো বিশদ জানতে চায় কিভাবে তিনি চুনকা ভাই হয়ে উঠেছিলেন আর কিভাবে মাটি ও মানুষের লোক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায় তাহলে নতুন প্রজন্মকে আমাদের চুনকা ভাই গ্রন্থটি পড়তে হবে। কিশোর চুনকা কি ভাবে নারায়ণগঞ্জের সকলের কাছের মানুষ হলেন তার বিবরণ পাওয়া যাবে এই বইতে। আমাদের বিশ্বাস বইটি পাঠ করলে সকলেই বলবেন ধন্য ধন্য বলি তারে (লালন সাই রচিত বিখ্যাত গান)। কারণ হচ্ছে মানুষের জন্য কাজ করে প্রয়াত আলী আহমেদ চুনকা জীবনের অর্থকে পূর্ণ করে গেছেন। ড.করুনাময় গোস্বামীর কলমে বের হয়ে এসেছে চুনকা ভাইয়ের জীবন সফল নয় সার্থক ছিল। লিখেছেন তিনি, শিক্ষায় সফল করে সার্থক করে না। কিন্তু মানব জীবনেসর পরম বস্তুটি হচ্ছে সার্থক হওয়া। সার্থক মানুষ দেখতে পাই খুব কম। নিতান্তই কম। আলী আহম্মদ চুনকা একজন সার্থক মানুষ ছিলেন।
প্রবাদ প্রতীম সাংবাদিক এবিএম মুৃছা কিশোর চুনকা কিভাবে আলী আহমেদ চুনকা নামে জননেতা হলেন তার ধারণা দেয়া চেস্টা করেছেন। তিনি লিখেছেন, আওয়ামীলীগের দুৃঃসময়ে যে চুনকা ভাই দলের জন্য ভুমিকা রাখতে পারবেন সে বিষয়টা বুঝতে ভুল করেন নি বঙ্গবন্ধু। আওয়ামীলীগের খারাপ সময়ে ঠিকই চুনকা দলের জন্য কাজ করে জাতির জনকের বিশ্বাসের মূল্য দিয়েছে। এবিএম মুছা ১৪ বছর বয়সের চুনকাকে খুজে পান খান সাহেব ওসমান আলীর সাথে । ১৯৪৮ সালে শহীদ সহরোয়ার্দী যখন কলকাতা থেকে নারায়ণগঞ্জ আসেন নদী পথে।
আমাদের চুনকা ভাই আরো কিছু বিবরণঃ কাবাডি খেলোয়াড় আলী আহাম্মদ চুনকা মানুষের বিপদে আপদে ছুটে গিয়ে কখন যে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হন তা তিনি জানতেই পারেন নি। আর জানতে চানও নি। এ জন্যই সহজ সরল ভাবে চলা ফেরা করতেন। সকলের সাথে মিশতেন। তার সহকর্মী প্রয়াত জেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহবায়ক মফিজুল ইসলামের ভাষায়,জীবনে জীবন যোগ না হলে কৃত্রিম পণ্যেও পসরায় ব্যার্থ হয় জীবনের উদ্দেশ্য। আর ফুলজুড়িময় শব্দ চয়ণ হুবহু মিলে যায় নারায়ণগঞ্জের কিংবদন্তি পুরুষ আলী আহমেদ চুনকার মন ও মননে। তিনি আরো বলেছেন, আইয়ুব খানের আমলে পিডিএম গঠন করা হয়। তখন নারায়ণগঞ্জের অনেকে আওয়ামীলগি ছেড়ে আইয়ুবখানের দলে যোগ দেন। ( এসকল নেতাদের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুলিখককে অনুরোধ জানান মফিজুল ইসলাম)। কিন্তু চুনকা ভাই বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে যান নি। আরো বলেন,৬৬ সালের ছয় দফা আর১৯৭০ সালের নির্বাচনে দলের জন্য ব্যাপক তৎপরতা চালান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিয়োগান্ত ঘটনা জাতিকে কলুষিত করে। স্বপরিবাাে শাহাদৎ বরণ করেন জাতির পিতা। আমরা অনেকে গ্রেফতার হই। চুনকা ভাইকে নজরবন্দি করা হয়। পরের বছর ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধুর নামে কেউ মিলাদ পড়ানোর সাহস পায়নি। প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে। কিন্তু চুনকা ভাই প্রকাশ্যে নানন কর্মসুচি পালন করেন।১৯৮২ সালে সামরিক আইন জারি হয়, অনেকে আত্মগোপন করেন। এবারো চুনকা ভাই তার চারিত্রিক বৈশিস্ট বজায় রেখে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আগলে রাখেন। জীবনের শেষ সময়ে এসে চুনকা ভাই সম্পরের্ক সত্য কথা বলতে পেরে হালকা বোধ করছি।
কবি ওয়াহিদ রেজা বলেছেন,রবীন্দ্রনাথ হয়েছেন বাংলা সাহিত্যের প্রধান পুরুষ। তেমনি নারায়ণগঞ্জবাসীর দ্ব্যর্থহীন নেতা হতে আলী আহাম্মদ চুনকাকে বিদ্যায় একাডেমিক্যাল পন্ডিত হওয়া লাগে নি। তার মৌলিক প্রতিভার বিকাশই তাকেঁ অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বিকশিত করেছে। …..আমি জীবনে একজন নেতাই দেখেছি যাঁকে রিকশাওয়ালা,মুচি, ফেরিওয়ালা,হকার,মেথর যেই চুনকা ভাই বলে ডাক দিয়েছে; তার ডাকেই তিনি কেবল হাত তুলেই ভালোবাসা বা দায়িত্ব প্রকাশ করেনি; থেমে, দাড়িয়ে কাধেঁ হাত রেখে কুশল বিনিময় করেছেন, এমনকি মুচির কতাঠের বাক্স্রের ওপর অথবা মেথরের টুলে বসে পড়ে কথা বলেছেন।
সাংবাদিক কাশেম হুমায়ুন বলেছেন, ১৯৫৪ সালে নারায়ণগঞ্জে বসন্ত রোগ দেখা দেয়। বহু জীবন ঝরে পড়তে থাকে। অবস্থার বিবরণ দিয়ে তিনি আরো বলেন, আত্মীয়রাও পরিবারের সদস্যদের ফেলে পালিয়ে যাচ্ছিল নিজের জীবন বাঁচাতে। এ সময় চুনকা ভাই নিজের হাতে বহু বসন্তরোগীকে সেবা-শুশ্্ুরষা দিয়ে সুস্থ্য করেছেনঅ মৃতদেও দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। এমন মানবতাবাদেও চর্চাতারঁ এক অনন্য দৃস্টান্ত। শিক্ষার বিস্তারে শিশুবাগ কলরব প্রতিষ্ঠা করেন। বহু সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠায় ভুমিকা রাখেন। নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব, সুধীজন পাপঠাগার,বেপারীপাড়া মসজিদ বেগম রোকেয়া খন্দকার স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্ধ করেগেছেন পৌরসভার জমি।
তারাপদ আচার্য্য বলেছেন, ১৯৬৪ সালে উপমহাদেশে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা শুরু হয়। এ সম্পর্কে তিনি বিবরণ দেন, সামপ্রদায়িক শক্তির দানবীয় তান্ডব ঠেকাতে চুনকা ভাই সেদিন সিংহপরাক্রমে রুখে দাড়িয়েছিলেনসর্বত্র। বহু হিন্দু পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করেছিলেন। চুনকাভাইয়ের নিরলস চেস্টায় সেদিন বহু হিন্দু পরিবারের জানমাল আর ইজ্জত রক্ষা পেয়েছিল। আমি একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে চুনকা ভাইয়ের এই মানবিক অবদান আজীবন মনে রাখব।
শ্রমিক নেতা শহীদুর রহমান বাঙ্গালী তার লেখায় বলেন, নারায়ণগঞ্জের সর্বহারা, শোষিত, বঞ্চিত, খেটে খাওয়া শ্রমিক শ্রেনীর ওপর ঠিকাদার নামক একদল হৃদয়হীন লোক জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। মাঝে মাঝে এব্যাপারে চুনকা ভাইয়ের সাথে আলোচনা হতো। তখন দেখেছি তাঁর ও হৃদয়ে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য অসীম ভালোবাসা এবং হৃদয় নিংড়ানো সহানুভূতির স্বতঃর্স্ফূত প্রকাশ। অতঃপর তাঁর অনুপ্রেরনায় নারায়ণগঞ্জ পাট শ্রমিক সমিতি নামে সংগঠন গড়ে তুলি। তিনি সভাপতি, নাজিমউদ্দিন মাহমুদ সম্পাদক, আমি সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম। টানবাজারের অবহেলিত ধাঙ্গরদের কস্ট দূর করে সমাজে তুলে আনতে চুনকা ভাই নগর সুন্দর সমিতি নামে সংগঠন গড়ে দেন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর আমি যে মানুষটির মাঝে মানবতার চরম বিকাশ দেখেছি, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তা তার মাঝে বিদ্যমান ছিল। ১৯ তারিখ যখন পাকিস্তানী দোসরদের ধরে এনে নির্বিচারে হত্যায় লিপ্ত, অপরাধী আর নিরপরাধী শনাক্ত করা দুঃসাধ্য । সে দিন আলী আহমেদ চুনকা অন্যনেতাদের থেকে ব্যতিক্রম ছিলেন। তার আকুল আবেদন ছিল মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বিনা বিচারে আর একটি লোকও তোরা হত্যা করবি না। (তার উছিলায় অনেকের জীবন রক্ষা পায়) নারায়ণগঞ্জের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে গেছেন দেখেছেন শুনেছেন, পর্যবেক্ষন করেছেন যে প্রতিহিংসা আর ব্যক্তিগত শক্রতার কারণে এই হত্যাকান্ড চলছে।
আব্দুর রাশেদ রাশু বলেছেন,ছাত্র ছাত্রীদের সৎ পথে চলার উপদেশ দিতেন । মুক্তিযুদ্ধে যুবকদের অংশ গ্রহনের সুযোগ করে দিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। ৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা ২৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ কোর্টের মালখানা (অস্ত্রাগার) লুট করে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি চুনকা ভাইয়ের নেতৃত্বে। এডভোকেট সুরুজ আলী বলেছেন,আমাকে যদি কেউ প্রশ্ন করে-আলী আহম্মদ চুনকার সার্বিক মূল্যায়নে অপনার কাছে তাঁর কোন দিকটি সবচেয়ে উজ্জল ? আমি নির্দ্বিধায় বলব- তাঁর বিচারিক ক্ষমতা, যা অসাধারণ ছিল তিনি একজন ন্যায় বিচারক ছিলেন। অন্যায়ের সাথে আপস করেননি কখনো। এ পর্যায়ে একটি ঘটনার বিবরণ দেন এডভোকেট সুরুজ আলী। শেষে উল্লেখ করেন আলী আহম্মদ চুনকার তুলনা শুধু তিনি নিজেই।
বর্তমান এমপি সেলিম ওসমান তার লেখায় চুনকা চাচাকে যেমন দেখেছি শিরোনামে একাংশে বলেন,আমার রবাবা একটু রাশভারী প্রকৃতির লোক ছিলেন, তাই নেতাকর্মীদের সাথে কথাও একটু কম বলতেন। অল্প কথায় সব কিছু বুঝিয়ে দিতেন। আর চুনকা চাচা ছিলেন প্রাণ খোলা প্রকৃতির লোক। শহরের বিভিন্ন চা স্টলে নেতাকর্মীদেও সাথে খোশগল্প করতে দেখেছি। কর্মীদেও সুখে-দুঃখে আপনজনের মত ছুটে যেতে দেখেছি। ১৯৭৫ সালের পর অনেক কস্টে চলছিল আমাদেরসংসার। তখন চুনকা চাচা নিজে এবং লোক মারফত আমাদের পরিবারের খোজ খবর নিয়েছেন এবং সাহায্যহযোগীতা করেছেন। এমনকি ব্যাংকের দেনার দায়ে যখন াামাদেও বাড়ি হীরা মহল নিলাম ওঠে তখন শফি হোসেন খান (শফি চাচা) ও চুনকা চাচা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাদের অগ্রনী ভুমিকা আমাদের বাড়ি নিলাম হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
আলী আহমেদ চুনকার ৩২ তম ওরশ মোবারক কর্মসুচিতে তাঁর কনিষ্ঠ সন্তান আহম্মদ আলী রেজা উজ্জল বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, আমরা ভাই বোনেরা আব্বার কাছ থেকে খুব বেশী সময় পাই নি। তাকে তেমন কাছে পাইনি। তিনি সব সময় ব্যস্ত থাকতেন মানুষ নিয়ে। আমাদের বাড়িতে ছোট বেলা থেকেই দেখেছি মানুষের ভিড়। আমরাও চাই আব্বার মতো মানুষের গোলামী করের যেতে। প্রয়াত পৌর কমিশনার সাহাবুদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, চুনকা শুধু একজন জনপ্রতিনিধি বা রাজনীতিবীদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ পিতাও। সন্তানদের শিক্ষা দিয়েগেছেন কিভাবে মানুষ হতে হয়। এজন্যই তার সন্তানরা আজ মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। পৌর মেয়র ( সিটি মেয়র) ডাঃ আইাভির কথা উল্লেখ করেনে।
দেখা যাচ্ছেঃ পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় সময় না দিতে পারলেও তার প্রবল ব্যাক্তিত্ব সন্তানদের আকর্ষন করেছে। মনে ভাষাটাও বুঝতে পেরেছে সন্তানরা। এটা সম্ভব হয়েছে পারিবারিক সংস্কৃতির কারণে। প্রয়াত স্কাউট লিডার গফুর চৌধুরী তার লেখায় আলী আহমেদ চুনকার পারিবারিক বিষয় সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করেন। ছোটবেলায় তাদের বাড়িতে গেলে চুনকা ভাইয়ের মায়ের ব্যবহারের বিষয়টা তুলে ধরেন গফুর চৌধুরী। আরো বলেছেন চুনকা একজন কাজ পাগল লোক ছিলেন। তবে সেটা ভালো কাজে হতে হবে।
আমাদের চুনকা ভাই বইতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আমাদের রাজনীতির বাতিঘর ও অনুপ্রেরণা শিরোনামে। ওবায়দুল কাদের , জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আরো অনেকে লিখেছেন চুনকা ভাই সম্পর্কে। অন্য দিকে শাহেদ আলী মজনু তিন পাতার বর্ণনায় অনেক কিছু তুলে ধরেছেন। জালাল উদ্দিন রুমীর আলোচনাও প্রাণবন্ত। এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, আব্দুর রহমান , এডভোকেট আসাদুজ্জামান,মোহাম্মদ ইসহাক, বুলবুল চৌধুরী, হালিম আজাদ, রফিউর রাব্বি, জাফর আহমদ, হাবিবুর রহমান বাদল। এভাবে কার লেখা বাদ দেয়া যায়। সবাই যার যার মতো করে চুনকা ভাইকে যে ভাবে দেখেছেন তার চুম্বুক অংশ বলতে চেস্টা করেছেন। যার মধ্যে থেকে প্রতিবেদনে সামান্য উদৃতি তুলে ধরে একটা ধারনা উপস্থাপনের চেস্টা করা হলো । বিশিস্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র পরিচালক তমিজউদ্দিন রিজভীর ভাষায় আলী আহমেদ চুনকা ছিলেন ক্ষণজন্মা এক মানুষ। অধ্যাপক বুলবুল চৌধুরী তার লেখায় কবি নজরুলের কবিতার একটি চরন তুলে আনেন। আলী আহম্মদ চুনকার মূল্যায়নে। ”তারে স্বর্গেও আছে প্রয়োজন যারে ভালোবেসে মাটি”। সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোর্শেদ ফারুকী লেখার শেষ অংশে বলেন ,জীবন সায়াহেৃ এসে প্রতি মূহুর্তে তাকে মনে পড়ে আর দু-চোখের কোণে বিন্দু বিন্দু জল জমে। মনের কথা বলার মানুষ আমার আর রইল না।
চুনকা ভাই ছিলেন গুনের অধিকারী। যা বিশিস্টজনদের মুখে প্রকাশ পেয়েছে। মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য কি তার দর্শন পাওয়া যায় আলী আহমেদ চুনকার জীবনীতে। ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে জীবনের শেষ নির্বাচনী জন সভা করেন ডায়মন্ড চত্বরে। বক্তব্য দিতে দাড়িয়ে এক অভুতপূর্ব আচরণ করেন। বলেন, আমি যদি কখনো কোন ভুল করে থাকি তাহলে আপনারা আমাকে আল্লাহরওয়াস্তে মাফ করে দেবেন। এই কথা বলে দুইহাত দুই দিকে প্রসারিত করে দেহটা সামনের নুইয়ে দেন। যারা সে দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেউ নিশ্চয় দৃশ্যটি ভুলে যান নি। অনেকে এখনো সে বিবরণ দেন স্তৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করা দৃশ্যের। চুনকা ভাই আহলে সুন্নাহওয়াল জামাতের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। তিনি নকশাবন্দ আবুল ওলাইয়া তরিকার অন্যতম খলিফা হিসেবে পাগড়ি-পাট্টি লাভ করেন। পীর মুর্শিদদের দরবারে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। আল্রাহর প্রতিছিল পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ পেতো প্রতিটি কাজ কর্মে।
সঠিক ধারনা করছি ঃ চুনকা ভাই জীবনের অর্থ বুঝতে মানুষের কাজ করতে সারি সারি প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করে গেছেন। মানব সেবার মাঝেই মহান আল্লাহকে খুজে পাওয়ার চেস্টা করেছেন। লালন ফকির রচনা করেছেন ওপর নীচে সারি সারি সাড়ে নয় দরজা তারি লালন কয় যেতে পারি কোন দরজা খুলে ঘরে । ধন্য ধন্য বলি তারে। এখন আলী আহমেদ চুনকা যে কোন দরজায় পেরোয়াদেগারের কাছে কবুল হয়েছেন এবং চলে গেছেন তার পরম করুণাময়ই ভালো জানেন। কারণ চুনকাভাই সব দরজাতেই নাড়তে সক্ষম হন। ###